ডায়েরীঃ লেঃ কর্নেল আবদুর রব

<৯, ৬.২, ২২৮-২২৯>

সিলেট সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের ডায়েরী
লেঃ কর্নেল আবদুর রব

১৯৭১ এর মার্চে ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত ছিলেন

(অনুবাদ)

বিডিএফ সেক্টর ৪ যুদ্ধের দিনলিপি

 

তারিখসময়স্থানমন্তব্য
০২ এপ্রিল, ১৯৭১ শেওলাঘাটইপিআর এর সি/৯ প্লাটুন যাদের বরগ্রাম/গাজুকাঠি মোতায়েন করা হয়েছিল। তালিয়াপাড়া হেডকোয়ার্টার তাঁদের শেওলা ঘাট আসার নির্দেশ দিয়েছে।
০৫ এপ্রিল, ১৯৭১ -ঐ-ক্যাপ্টেন আজিজ (ইবিআর) এসেছেন এবং সি/৯ প্লাটুনের দায়িত্ব নিয়েছেন।
০৫ এপ্রিল, ১৯৭১রাত ৯.০০টা-ঐ-প্লাটুনটি রানাপিং গিয়ে ইবিআর কনভয়ের সাথে যুক্ত হয়েছে ক্যাপ্টেন আজিজের তত্ত্বাবধায়নে। সৈন্যদল সিলেটের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এর আগে গোলাপগঞ্জ এবং রানাপিং এর মাঝে জনাব তাইমুর(এমপিএ) সৈন্যদলের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি সি/৯ প্লাটুনের গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং পথে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন যাতে ৩ জন হালকা আহত হন। দুর্ঘটনার সাথে সাথে তইমুর এলাকা ত্যাগ করেন। ইবিআর কনভয় রানাপিং এর দিকে চলে যায় আর ইবিআর ঐ রাতের জন্য দুর্ঘটনা স্থলে থেকে যায়।
০৬ এপ্রিল ১৯৭১০৯:৩০ ঘন্টারানাখেলিইপিআর প্লাটুন ক্যাপ্টেন আজিজের নির্দেশে ইবিআর কনভয়ের সাথে এক ঘাটিতে মিলিত হয়। পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সৈন্যরা সেখানে আশ্রয় নেয়।
০৭ এপ্রিল ১৯৭১ -ঐ-ইবিআর কনভয় ডাকা দক্ষিণের দিকে অগ্রসর হয় এবং ইপিআর, পিআই ফুলবাড়ি/ভাইটিকের এলাকায় ডিফেন্স পজিশন নেয়।
০৮ এপ্রিল ১৯৭১ -ঐ-রাতে ইবিআর কনভয় সিলেটের দিকে অগ্রসর হয়।
০৯ এপ্রিল ১৯৭১ ফুলবাড়িফুলবাড়িতে তেলিয়াপাড়ার নির্দেশে ইপিআর ৩নং উইং এর সি/৮ প্লাটুনের  এন/সাব মতিউর রহমান সি/৯ পিআই এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১০ এপ্রিল ১৯৭১ কদমতলিসি/৯ পিআই ১২০০ঘন্টার সময় কদমতলি বাস স্ট্যান্ডে পৌছে ডিফেন্স পজিশন নেয়। ১৩০০ ঘন্টার সময় শত্রু বিমান আক্রমণ চালায় কিন ব্রিজের ইবিআর পজিশন এবং ইপিআর, পিআই এর কদমতলি পজিশনের এলাকাতে। পাক বাহিনীও হালকা অস্ত্র ( ৩ইঞ্চি মর্টার/ ৬ পিডিআর) দিয়ে হামলা শুরু করে। গুলি বিনিময় প্রায় ২১ ঘন্টা ধরে চলে এবং তারা কিন ব্রিজ অতিক্রমের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয় এবং প্রচুর হতাহতের শিকার হয়।
১১ এপ্রিল ১৯৭১১০০০ ঘন্টা-ঐ-ইপিআর যখন কদমতলি এলাকাতে অভিযান চালাচ্ছিল তাদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪। ১০০০ ঘন্টার সময় পাক বাহিনী ইপিআরের উপর গোলাবর্ষণ শুরু করে । কয়েক মিনিট পর পাক বাহিনীকে কিন ব্রিজ/ ভরতাখোলা এলাকা থেকে অগ্রসর হতে দেখা যায় যেখানে ইবিআর কনভয় ডিপ্লয় করা ছিল। এতে করে ইপিআর বুঝতে পারে যে ইবিআর কনভয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিমান সাপোর্ট এবং মরটার আক্রমণের আগ পর্যন্ত ইপিআর পাক বাহিনীর পথ আটকিয়ে রাখে। ইপিআর ডিফেন্স পজিশন থেকে সরে আসে এবং সন্ধ্যায় যাত্রীবাহী বাসে করে ফুলবাড়ি পৌছে সেখানে ঐ রাতের জন্য অবস্থান নেয়।
১২ এপ্রিল ১৯৭১০৭০০ ঘন্টাশেওলাঘাটশেওলা ঘাট এসে ডিফেন্স পজিশন নেওয়া হয়েছে।
মেজর সি আর দত্ত এসে কমাণ্ড গ্রহণ করেন। ১১ এমজেডি/ আনসার শেওলাঘাটায় যুক্ত হয়, অগ্রসর হয় এবং রানপিং এলাকায় ডিফেন্স নেয় যখন পিআই সদস্য ছিল মাত্র ২৫ জন। আবার আরো ২৯ জন মুজাহিদ/ আনসার পিআই এর সাথে যুক্ত হয়। ব্রিগেডিয়ার পান্ডে এবং অন্যরা এসে উপস্থিত হন এবং গোপালগঞ্জ এবং ফুলবাড়ি/ভাইতিকের এলাকাতে রেকি  করেন। ব্রিগেডিয়ার পান্ডের বিএসএফ ইউনিট এসে ঐ এলাকাতে মাটি খুঁড়ে ডিফেন্স নেয়। ইপিআর পিআই হাতিমগঞ্জ এলাকাতে মাস্ক পজিশন নেয় এবং এক জিপে গুলি করে যাতে ৩/৪ জন ইউনিফর্ম পরা সৈন্য ছিল। জিপ থামিয়ে তারা সিলেটের এসপি সহ হাত উচিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তাদের গ্রেফতার করে ডিফেন্স এলাকাতে আনা হয়।
২০ এপ্রিল ১৯৭১ শেওলাঘাট১/১০ সদস্যের এক পার্টি শেওলাঘাট ফেরী ধ্বংসের জন্য পাঠানো হয়। তারা ২০ এপ্রিল ১৯৭১ রাতে ফেরী ধ্বংস করে এবং ২ইঞ্চি মর্টার/এলমজি ফায়ার করে ৮ জন পাক বাহিনী সদস্যকে হত্যা করে। এন/সাব মতিউর রহমানকে রাতে খারগ্লিঘাট ফেরী ধ্বংসের জন্য বরইগ্রামে এক সিভিলিয়ানের সাথে বোটে করে পাঠানো হয়। উপরের ঘাট সমূহের ফেরীগুলো নিপুণ ভাবে ধ্বংস করা হয়।
২১ এপ্রিল ১৯৭১ শেওলাঘাটক্যাপ্টেন এ. রব যোগদান করেন।

 

Scroll to Top